সাতকানিয়ায় চিহ্নিত চাঁদাবাজ,হানিফের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের সংবাদ সম্মেলন
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মামলাবাজ মো. হানিফের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। আজ রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাতকানিয়ার আমিলাইষ গ্রামের বাসিন্দা মো. শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মো. হানিফ দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় এবং মিথ্যা মামলার মাধ্যমে হয়রানি করে আসছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে শহীদুল ইসলাম জানান, তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং বর্তমানে পার্শ্ববর্তী চন্দনাইশ উপজেলায় বসবাস করছেন। গেল রমজানের কয়েকদিন আগে মো. হানিফ তার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় ঈদের পর (২৬ ফেব্রুয়ারি) চন্দনাইশে তার ব্রিক ফিল্ডে এসে মো. হানিফ হামলা চালান। লোহার রড় দিয়ে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে তিনি তা রক্ষা করতে গিয়ে পায়ের আঙুলে মারাত্মক আঘাত পান। এতে তার পায়ের ৫ নম্বর আঙুলে সাতটি সেলাই দিতে হয় এবং দীর্ঘ দুই মাস তাকে চিকিৎসা নিতে হয়। এছাড়া হামলার সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ক্যাশবক্সে থাকা ৩০ হাজার টাকা চুরি করা হয়। যাওয়ার সময় হামলাকারীরা তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে যায়।
শুধু শহীদুল ইসলাম নয়, এলাকাবাসীর একাধিক ব্যক্তি মো. হানিফের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মো. জাহেদ বলেন, “হানিফ আমার চাচাত ভাই। গত বছর জমির মাটি কাটার বিষয়ে একটি মিথ্যা মামলায় আমার বাবাকে আসামি করে। এবার একই জমির ঘটনায় আমাকে আসামি করেছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একই জায়গা থেকে প্রতি বছর ৩০-৪০ লক্ষ টাকার মাটি কাটার অভিযোগ বাস্তবসম্মত নয়। তাহলে কি সেখানে সোনা উৎপাদন হয়?”
ভুক্তভোগীরা জানান, মো. হানিফের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ জমা দিলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। বরং অভিযোগকারীরাই উল্টো হয়রানির শিকার হন। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে ভয়ভীতি দেখান এবং কথিত ক্ষমতার দাপটে সাধারণ মানুষকে নানাভাবে চাপে ফেলেন। তার বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়লেও রহস্যজনক কারণে মামলা নেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. মইন উদ্দিন। তিনি বলেন, “মো. হানিফ কমপক্ষে একশত ব্যক্তিকে ভুয়া মামলায় ফাঁসিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি রোহিঙ্গাদের দিয়ে আইডি কার্ড তৈরি করে দেওয়ার মতো ভয়ঙ্কর অপরাধেও জড়িত। এখনো তার বাসায় রোহিঙ্গা থাকার প্রমাণ রয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান, মো. হানিফের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তারা বলেন, “আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া সাধারণ মানুষ এ ধরনের সন্ত্রাসীদের কবল থেকে মুক্তি পাবে না।”
Leave a Reply