মাদকসেবন, অশালীন ভিডিও ধারণ ও বেপরোয়া জীবনযাপনের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে লিজা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বান্দরবানের মেয়ে লিজা চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। এদিকে একই দিন চাঁদাবাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাছির নাঈম এবং সংগঠক শাহরিয়ার সিকদারকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
চট্টগ্রামের ছাত্রনেত্রীর ‘কেলেঙ্কারি’তে কাঁপছে নেটদুনিয়া, ঘোষণা দিয়ে বহিষ্কার 1
শনিবার (১৭ মে) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মঈনউদ্দীন ও সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মাদকসেবন ও তার অশালীন কিছু ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নেটজগতে ওঠে সমালোচনার ঝড়। বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের নেতারা ফাতেমা খানম লিজাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।
‘বহিষ্কারাদেশ’ শিরোনামে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা’র মাদক সেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ছবি/ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রায় ১৪০০ শহীদ ও অর্ধলক্ষ আহতদের উপর দাঁড়ানো এই প্ল্যাটফর্মের কোন সদস্যের এমন অনিয়ন্ত্রিত ও অসামাজিক কার্যকলাপ জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে। তাই ফাতেমা খানম লিজাকে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র পদ থেকে অব্যহতি প্রদান করা হলো।’
s
ভিডিও ক্লিপগুলো নকল নয়
কাছে আসা এমন বেশ কিছু ভিডিও ক্লিপ ও ছবিতে দেখা যায়, কোনোটিতে ‘ভ্যাপ’ সেবন করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ। কোনোটিতে আবার এক তরুণীকে অশালীন অবস্থায় দেখা যায়। এছাড়া কিছু আপত্তিকর কথোপকথনও হাতে এসেছে। তবে ডিপফেইক অডিও বা ভয়েস শনাক্ত করে— এমন আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করেও ভিডিওগুলো যাচাই করেছে । এতে ভিডিওগুলো এআই দিয়ে তৈরি— এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ছবি বা ভিডিওর ওই তরুণী ফাতেমা খানম লিজা কিনা সেটি চট্টগ্রাম প্রতিদিন তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি।
লিজার অস্বীকার
এদিকে রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিওতে ফাতেমা খানম লিজা দাবি করেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, প্রথমত অভিযোগ দিয়েছে মাদকসেবনকারী, আমি আল্টিমেটাম দিচ্ছি তারা (আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন) যদি আগামী দুই ঘন্টার মধ্যে আমার মাদকসেবনের কোনো প্রমাণ দিতে না পারেন, তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। দ্বিতীয়ত হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত জীবন নিয়ে। এটি সম্পূর্ণ বেইজলেস একটি ইস্যু।’
সংগঠক শাহরিয়ার সিকদার এবং যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাছির নাঈম
সংগঠক শাহরিয়ার সিকদার এবং যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাছির নাঈম
বহিষ্কার আরও দুই নেতা
এদিকে একই দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত অপর দুটি বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাছির নাঈম এবং সংগঠক শাহরিয়ার সিকদারকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। বন্দর থানায় ব্যবসায়ীকে হেনস্তা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে নাঈমকে এবং চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত সংবাদ ও ডবলমুরিং থানায় আটক হওয়ার ঘটনায় শাহরিয়ারকে পদচ্যুত করা হয়েছে।
Leave a Reply